Type Here to Get Search Results !

Hollywood Movies

গল্প: পিরিয়ড - মেহেদি হাসান শুভ (সব পর্ব)




পিরিয়ড নিয়ে বাসর ঘরে বসে আছি।। খুব অস্বস্তি হচ্ছে
আমার। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।। অচেনা
একটা ছেলেকে কথাটা বলি কিভাবে? সে কিই না
ভাববে? অথবা আমার ইচ্ছার কতটুকুই বা মূল্যায়ন করবে??
যদি এমন অবস্থায়ও পুরুষত্ব ফলাতে চায়??
উফ কিছুই ভাবতে পারছিনা।। যতই সময় গড়িয়ে যাচ্ছে
ততই আমার টেনশনের মাত্রা বাড়ছে।। কি এক
অপ্রত্যাশিত ঝামেলায় না পড়লাম!!!!!

বিয়েটা আমার পারিবারিক ভাবেই হয়েছে।।
মধ্যবিত্ত এক ছোট পরিবারের সদস্য ছিলাম আমি।।
বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে।।ছোটবেলা থেকেই খুব
পরিপাটি পরিবেশে বড় হয়েছি। এত আদরের মাঝেও
কেনো জানিনা অনার্স ১ম বর্ষে আসতেই বাবা মার
কাছে ভারী হয়ে গেলাম। বসতে হলো বিয়ের
পিড়িতে।
ছোটবেলা থেকেই একটু শান্ত স্বভাবের মেয়ে আমি।
ঝামেলা তেমন একটা পছন্দ নয় আমার।। আর এই বয়স পর্যন্ত প্রেমের অভিজ্ঞতা একেবারে নেই বললে একটু ভুল হবে, কলেজে থাকতে প্রেমে জড়িয়েছিলাম একবার।।
তবে ছেলেটির ভালোবাসার মাঝে চাহিদার
ব্যাপক আগ্রহটা আমাকে একেবারেই নিরাশ
করেছিলো।। তারপর এই বিষয়টা নিয়ে আর ভাবার সময় হয়ে ওঠেনি।।অবশ্য আমার বন্ধু বান্ধবীদের অনেক ভালো খারাপ প্রেমলীলা খুব কাছ থেকে দেখেছি।।
যাইহোক যে ছেলেটির জন্য অধীর আগ্রহে এই
ফরমালিটি রক্ষার জন্য সেজেগুজে বসে আছি, তাকে
বিয়ের আগে আমার দেখার বা কথা বলার সৌভাগ্য
হয়ে ওঠেনি।। শুধু একবার মনের বিপরীতে ফটোটা
দেখেছিলাম, তবুও মায়ের জোড়াজুড়িতে।। খুব রাগ
হয়েছে বাবা মার ওপর।। কেননা এখুনি বিয়ে টা
কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না আমি।।
একপ্রকার জোরের মুখেই বাধ্য হয়েছি বিয়েটা করতে।।
এখন পর্যন্ত ছেলের বাড়ির পরিচিত বলতে ছেলের
মাকে বিয়ের আগে অনেকবার দেখতে হয়েছে,, সেই
সুবাদেই একটু পরিচিত।। আর আমার বরটার নামটা জানি শুধু।।।
খুব সুন্দর না হলেও, আমার পছন্দসই নাম ওর।। মিঃ হৃদয়।।
আর আমি হলাম মিমি......মি.....মি।।।
এই মিঃ হৃদয়!! একপিছ...?? শালা কথা নাই বার্তা
নাই সেজেগুজে বিয়ে করতে চলে গেলো আমাকে।। খুব
রাগ হচ্ছে ওর ওপর।। কিন্তু এই অবস্থায় আমার কোনো বুদ্ধিই কাজ করছে না।। যাইহোক একটু শান্ত ভাবে বসে
থাকি, দেখি বীরপুরুষ মিঃ হৃদয়ের কখন ঘরে আসার
সময় হয়।।
হঠাৎ ই দরজায় খট করে শব্দ হলো, আমার ভেতরটা চমকে ওঠলো। মনে হয় মিঃ হৃদয় সাহেব চলে এসেছেন। আমি একটু নড়েচড়ে ঠিক হয়ে বসলাম, যেনো বলি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।।
কিন্তু দরজায় শব্দের বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেলো
অথচ কেউ ঘরে আসছে না।। ব্যাপার কি তাহলে শব্দটা
কিসের হলো?? তাহলে মিঃ হৃদয় কি এখানে আসে
নি।।,,,,
উফফ অসহ্য লাগছে আমার।। খুব রাগও হচ্ছে শালা
হ্যাংলার ওপর।। ছবিতে দেখে যেটুকু বুঝেছি
হ্যাংলা, লম্বা, ফর্সা আর বড় চুলে আবৃত কপালের ঠিক
নিচ বরাবর লম্বা নাকের ওপর এক বিন্দু তিলক, যা পুরো মুখটাকেই সুন্দরে ভরে তুলেছে। যার মায়াবি চোখে
অগাধ খাদ।।যা নিবিড় মায়াময়।। এমন দেখতে ছেলে
হলেও আমার কিচ্ছু যায় আসে না।। ব্যাটাকে আজ
জ্বালা বোঝাবো।। কিন্তু পরক্ষনে ই চুপসে গেলাম।।
ইস্স বাসর ঘর বলে কথা,, কি যে ভাবছি, না জানি
ভাবনাগুলো আমার ওপরই প্রতিফলিত হয়।।
আবারও হঠাৎ করেই ভয়টা বাড়তে লাগলো।।
এরই মধ্যে আমার ঘুমের ভাবটাও চলে এলো।। প্রায় ঘুমো ঘুমোই হয়ে আসছিলাম।।
হঠাৎ করেই স্বজরেই দরজাটা খুলে গেলো,, আমি
আতঙ্কে জেগে ওঠি।। দেখি মিঃ হৃদয় তাড়াহুড়া
করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। ওকে দেখে মনে হচ্ছে
যেনো যুদ্ধ জয় করে ফিরলো।। এদিকে ওকে দেখে
কাকভেজা মনে হচ্ছে আর হাতে একটা কিছু দেখা
যাচ্ছে।। তারমানে বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে আর
মহাসাহেব কিছু আনতে গিয়ে কাকভেজা হয়ে
ভিজেছে।। ওদিকে ওর এমন অবস্থা আমাকে সত্যি সত্যি আতঙ্কে ফেলে দেয়।।
আমি চুপচাপ হয়ে বসে পড়লাম।। ও আমার দিকে এগিয়ে আসছিলো।। আমার হৃদকম্পন দ্বিগুন হতে লাগলো।।
কাছে এসে হাতের জিনিসগুলো ডেস্কে রেখে, খুব
শান্তভাবে আমার সামনাসামনি বসলো।। আমার
অস্বস্তিটা আরো বেড়ে গেলো।। কাছে এসেই কিছু না
বলেই আমার হাতদুটো খুব আলতো করে ধরলো।। আমার মনের ভাবনাগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে লাগলো।
আমি কিছু না ভেবেই খুব আস্তে করে হাতটা ছাড়িয়ে
নেওয়ার চেষ্টা করলাম।। আর তাতেই সে আরো শক্ত
করে হাতটা চেপে ধরলো।। এইবার আমার খুব বিরক্ত
লাগছিলো আর হাতটা ছাড়িয়ে নিতে ইচ্ছে
করছিলো, কিন্তু কিছুই করতে পারছিলাম না আমি।।
হঠাৎ ই আমার চিন্তায় ছেদ ঘটিয়ে মিঃ হৃদয় বলে
ওঠলো --
--আমি জানি তোমার খারাপ লাগছে।। কিন্তু কি
বলোতো সেই ছোটবেলা থেকেই এই রাতটি নিয়ে
কতো চিন্তা করে আসছি আর আজ কোনো কথাই খুজে
পাচ্ছি না।।(হৃদয়)
খুব শান্ত আর মায়াবি চাহনি নিয়ে কথাগুলো বললো
সে।। কেনো জানিনা এইবার আমার মনটা কেমন
হালকা হয়ে গেলো।। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার সে
বলতে লাগলো--
-- একটা কথা বলবো রাখবে??? (হৃদয়))
আমি মাথা নাড়ালাম।।
--তোমাকে সারাজীবন খুশি রাখার আপ্রান চেষ্টা
করবো, তুমি আমার পাশে থাকবে তো?? (হৃদয়)
আমি একটু অবাক হলাম তার কথায়। কি বলবো ভেবে
পাচ্ছিনা।। তবুও মাথা নাড়লাম ......থাকবো।।
.
তারপর কেনো জানিনা হৃদয় আমার হাতটা ছেড়ে
দিয়ে ওঠে দাড়ালো।। আর কিছু উপহার আমার হাতে
তুলে দিলো।। আমি স্বাভাবিক ভাবেই সেগুলো রেখে
দিলাম।। সত্যি কথা বলতে এখন পর্যন্ত ওনাকে চিনতে
পারছি না।। কেমন ছেলে ও!! হয়তো আমার ভাবনা টাই
ঠিক নয়তো না।। আর এতক্ষণে আমি একটা কথাও ওর
সাথে বলিনি।। চুপচাপ ওর গিফ্টের দিকে তাকিয়ে
আছি।। হঠাৎ ই হৃদয় আমার সামনে একটা ন্যাপকিনের
প্যাক দিয়ে বললো, যাও ফ্রেশ হয়ে আসো .....
আমি থ হয়ে গেলাম।। বিস্ময়ে আমার চোখদুটো
ছানাবড়া হয়ে গেলো।। আমি ওর দিকে অবাক
চাহনিতে তাকিয়ে আছি।। আবারও সে প্যাকটা একটু
নেড়ে আমার দিকে এগিয়ে দিলো ...........
.
আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো
..........

waiting for next part..........
part - to be continue........

💘💘💘 #গল্প = পিরিয়ড 💘💘💘

#সুচনা পর্ব______1

[সম্পুর্ণ গল্প না পড়ে কেউ বাজে কমেন্ট করবেন না।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আশা করি গল্পটি ভালো লাগবে।পড়লে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।ধন্যবাদ। ]


💘💘💘 #গল্প = পিরিয়ড 💘💘💘

#পর্ব______2

আবারও সে ন্যাপকিনের প্যাকটা একটু নেড়ে আমার দিকে এগিয়ে দিলো ....
আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো।

নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আমার মাথায়।। আমি সত্যিই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবছি যে মিঃ হৃদয় কিভাবে জানলো আমার পিরিয়ড সম্পর্কে..?? আর তাকে কেনোই বা এতটা শান্ত দেখাচ্ছে?? তাহলে কি আমার ভাবা চিরায়ত ভাবনাগুলো আসলেই মিথ্যা?? তাহলে কি আমিই ভুল ভাবছিলাম?? তাহলে কি ও অন্য আট দশটা (আমার চেনা অন্য মনমানসিকতার?) ছেলেদের মতো না?? নাকি শুধুমাত্র ক্ষনিকের ভালো মানুষী দেখানো??
কিছুই ভাবতে পারছিলাম না?? অনেক প্রশ্ন এখন
আমাকে দাপিয়ে বেরাচ্ছে!!!
যাইহোক একটু লজ্জা লাগলেও তার কাছ থেকে প্যাকটা আমি নিলাম।। প্যাকটা হাতে নিয়েই যেই
মাথা তুলেছি, দেখি হ্যাংলা টা আমার দিকে হা
হয়ে থাকিয়ে আছে,,,,
ভীষন লজ্জা পেলাম আমি।। কি বদজাত ছেলে,,,,!!!
লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে মনে হয়। মনে হয় জীবনে
মেয়ে দেখেনি।।
আমি বাথরুমের দিকে যাওয়ার জন্য একটু নড়ে ওঠলাম,তখনি সে সজাগ হয়ে আমার রাস্তা ছেড়ে দিলো।
যেনো এতক্ষণ ঘোরের ভেতর ছিলো।। তারপর আর কিছু না ভেবে আমি বাথরুমে চলে গেলাম।।।
প্রায় বিশ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে রুমে যাওয়ার জন্য
দরজা খুললাম।। সাথেই সাথেই কেউ একজন আমার
চোখদুটো ধরে আমাকে আড়াল করে নিলো,,,,
ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে ওঠলাম।। অমনি আরেক হাতে
আমার মুখটা চেপে ধরে বলে ওঠলো --- এই আমি
আমি........!!!প্লিজ চুপ করো, চুপ।।
ইসসস বদমাইশ ছেলেটা করছে কি?? ওকি আমাকে মেরে ফেলবে নাকি??
ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।। তারপর ও আমাকে
এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো। আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম।।
হঠাৎ হ্যাংলা টা আমার কানের কাছে মুখ এনে
বললো ----
---যাক তুমি তাহলে বোবা না ...চিৎকার অন্তত দিতে
পারো?? (হৃদয়)
--কিই,, কি বললেন আপনি?? আমি বোবা?? এই আমাকে আপনার বোবা মনে হয়?? ছাড়ুন আমার চোখ ছাড়ুন বলছি?? (আমি)
--এই সরি সরি সরি ....আমি বুঝে গেছি।। আরেকটু চলো না, তারপর চোখ ছাড়ি।। (হৃদয়))
--কি বুঝেছেন আপনি, হ্যা??? (আমি)
--না মানে,,,, তু তু তুমি ,,, ঠিকি তো,, এই যে কথা বলতে
পারো।। আসলে সরি টা গ্রহন করে চলোনা আরেকটু ??
(হৃদয়)
ইসস কি সুন্দর করে কথা বলে হ্যাংলা টা!!!!! আসলে খুব রাগে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, তাই একটু রাগ
ঝাড়লাম আর কি?? তাছাড়া বাসর রাত তো দূরের কথা
অন্যরাতেও আমি এমন করে কথা বলতাম না।। আসলে
হ্যাংলা টা কি চাইছে কি কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি
না?? আজ সারারাত কি এভাবেই জ্বালাতন করবে
নাকি,, ধুরর ভাল্গানে,!!??
এবার মিঃ হৃদয় সাহেব আমাকে নিয়ে থেমে
গেলেন।। তারপর আস্তে করে চোখটা ছেড়ে দিয়ে
বললেন --
-- এবার চোখটি খোলো।।। (হৃদয়)
আমি চোখদুটো খুললাম।
চোখদুটো খুলেই আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।। কিভাবে
সম্ভব?? আমি বিস্ময়ে অস্থিরর হয়ে গেলাম।। তাহলে
কি এইটাই হৃদয়।। এরকমই হৃদয়!! আমাকে এত বড়
সারপ্রাইজ করবে বলে এরকম করছিলো।।
নাহ্ তার সম্পর্কে আমার ধারনাটা ঠিক নয়।। এক অদৃশ্য ভালো লাগা কাজ করতে থাকে আমার, হৃদয়ের
ওপর।।। আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম।।।
-- আপনি এতসব জানেন কিভাবে?? আর এত তাড়াতাড়ি কিভাবে করলেন এতকিছু?? কথাটি বলতেই আনন্দে আমার চোখে পানি চলে এলো।।তিনি কোনো কিছুর উত্তর না দিয়েই আমাকে আলতো করে ধরে বললো --
-- চলো কেকটা কাটা যাক।।।
আসলে আজ আমার জন্মদিন।। এত ঝামেলার মাঝে
দিনটির কথা আমার খেয়ালই ছিলো না।। তিনি বিশ
মিনিটের ভেতরে এক অমায়িক ভালো বাসা দিয়ে
ঘরটি সাজিয়েছে।।। আর ওয়াল ব্যানারে ছোট করে
লেখা --------------তোমার মন খারাপের দেশে
------------------------
---------------------তোমায় রাখবো ভালোবেসে
----------------------------
আর বড় করে লেখা ------
হ্যাপী বার্থডে টু ইউ মিমি
উইশ অনলি ফর ইউ বাই মি.
মনে হচ্ছিল জন্মদিনে এর চেয়ে বড় গিফট কেউ কাউকে কোনোদিন দিতে পারে না।। নিমিষেই আমার মনটি আনন্দময় হয়ে ওঠলো।।। তারপর শুধুমাত্র আমি আর হৃদয় মিলেই কেকটা কাটলাম।। ও আমাকে উইশ করলো।। তারপর কেকটা আমাকে খাইয়ে
দিতে লাগলো।। আমার চোখদুটো হঠাৎ ই ছলছল হয়ে
আসছিলো।। আমি কোনোমতো নিজেকে সামলে
ওকেও কেকটা খাইয়ে দিলাম।। দেখলাম ওর চোখে
মুখে এক প্রাপ্তির নেশা।।
হঠাৎ ই হৃদয় আমাকে জড়িয়ে ধরলো।। আমি কিছুই
বললাম না।। জানিনা কেনো কিছু বলতে পারলাম না।।
শুধু নিজের মনকে আস্টপিষ্টে বাধতে চাইছিলাম
আমি।। কিন্তু কেনো,,,,,,,,???
এর উত্তর এই মুহুর্তে হয়তো কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব
নয়।।।।
আমি হৃদয়ের বুক থেকে মুখটা উঠিয়ে ওর দিকে
চেয়ে বললাম
-- আপনি এতকিছু জানলেন কিভাবে?? আমার জন্মদিন,আমার ভালোলাগা আর অন্যান্য বিষয়গুলি??
এবার কোনো কথা না বলেই হৃদয় আমার কপালে
চুমো একে দিলো।। আমি কিছুটা শিওরে ওঠলাম।
তারপর সে বললো ...
-- খুব ঘুম পাচ্ছিলো না তোমার?? দেখছিলাম তখন ঘুমে
একদম নুইয়ে পড়ছিলে।। চলো ঘুমাবো এখন।। আমারও খুব ঘুম পাচ্ছে।।
তারপর সুন্দর করে বিছানা করতে গেলো সে। আমাকে
আর কোনো কথার সুযোগ দিলো না।। আমিও বাধ্য
মেয়ের মতো শুইয়ে পড়লাম ওর পাশে।। মনে মনে
ভাবলাম এবার তাকে কথাগুলো আবার জিজ্ঞেস
করবো।। তাই তাকে আলতোভাবে ধাক্কা দিলাম।।
এ কি,,,, হ্যাংলা টা এই পাচ মিনিটের ভেতর ঘুমিয়ে
গেলো।। আমি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম।
কিন্তু না,,, সে তো ঘুমিয়েই গেছে।।
ধুরর ভাল্গানে,,,,!!! ফাজিল ছেলে একটা এরিমধ্যে
ঘুমিয়ে গেলো।।
রাগে নিজের মাথার চুলগুলো ছিড়তে ইচ্ছে করছে।।
কিন্তু কি আর করার, আমার এখন ঘুমাতে হবে।।
তবে সকল কিছুর মাঝে একটা বিষয় ভেবে ভালো
লাগছে যে,, বিয়ে নিয়ে আমার ভাবা সকল বিষয়গুলি
আস্তে আস্তে মিথ্যে প্রমানিত হচ্ছে।। আমার ভাবনার
উল্টো বিষয়গুলিই আমার সাথে ঘটে চলেছে।। চোখ
বুজে কেনো জানিনা মা -বাবাকে একটা ধন্যবাদ
দিতে ইচ্ছে করছে।।।।
ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে
পারিনি।। হঠাৎ ই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।। ঘুম
ভেঙে আবারও বিস্ময়ের সম্মুখীন হলাম।। দেখি অবাক
চাহনি নিয়ে হৃদয় আমার দিকে তাকিয়ে আছে??
চোখে চোখ পড়তেই ও চোখ সরিয়ে নিলো।।
তারমানে এতক্ষণ ধরে সে আমার দিকেই চেয়ে
ছিলো।। ভীষন অবাক হলাম আমি।। আমার জেগে ওঠা
দেখে হৃদয় অপ্রস্তুতে পরে যায়,যেনো আমার চোখে কিছুতেই ধরা দিতে চায় না।তারপর বলে উঠলো,

_ছাদে যাবে মিমি?(হৃদয়)

ওর প্রশ্নে অবাক হলাম আবারও।একরাত ছাদে যেতে চাইছে!বুজলাম খুব রোমান্টিকতা ভর করেছে তার উপর।কথাটি শুনে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাই নি,শুধু চেয়েছিলাম তার দিকে।আমার এইসব ভাবনার মাঝেই হঠাত ও আমাকে কোলে তুলে নিলো।আমি শুধুই তার চোখের দিকে তাকিয়েই তাকে জানার চেষ্টা করছিলাম____

আমি কেনো যেকোনো মেয়েই তার এই মায়াবি চোখে হারিয়ে যাবে এক নিমিষেই।এখন পর্যন্ত প্রতিটা মুহূর্ত,তার সাথে কাটানো সময়গুলো ভেবে ভাবতেছি__কিছু তো আছে এই মানুষটার মাঝে!আমি যেনো যুগ যুগান্তর হতে তাকে চিনি!যদিও সে ছিলো অনেকটা অপরিচিত আমার কাছে কয়েকটা ঘন্টা আগেও।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে তার সাথে ছাদে চলে এলাম।ছাদে এসে ও আমাকে কোলে থেকে নামিয়ে দিলো!এরপর কিছু বলার জন্য আমার কাছে আসতে চাইছিলো, ,,,
কিন্তু হঠাৎই ওর ফোনটা বেজে উঠে।তারপর ফের ওপাশ থেকে কেউ একজন তাকে কিছু বললো,,,
নিমিষেই তার হাসিমুখে চেহারার মাঝে এক অস্ফুট মলিন আভা ফুটে উঠলো!যা কিছুতেই আমার কাছে আড়াল করতে পারলো না সে,,,,,,,,,

Waiting for next part........
Part - To be continue..........

ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন...!



💘💘💘 #গল্প = পিরিয়ড 💘💘💘

#পর্ব______3
.
নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট মলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছে আড়াল করতে পারলো না সে ............
.
তাকে একটু চিন্তিত দেখাচ্ছিল।। তাই হঠাৎ ই আমি বলে উঠলাম --
-- কিছু হয়েছে কি?? সব ঠিক আছে তো?? (আমি)
আমার কথায় এক অমায়িক হাসি দিয়ে বললো ---
-- আরে নাহ্ ।। কি ভাবছো তুমি?? কিছুই হয়নি।। সব ঠিক আছে।। (হৃদয়)
-- না মানে এতরাতে ফোন ....!!তাই বলছিলাম আর
কি??? (আমি)
আমার কথা শুনে ও শব্দকরে হেসে ওঠলো আর ওর দুহাত দিয়ে আমার দুই গালে হাত দিয়ে শান্ত লাজুক গলায় বললো ----
--- বাহ্ ১ম রাতেই বরকে সন্দেহ করছো?? তোমার বর শুধু তোমারই।।
বলে আবারও আমার কপালে আলতো করে চুমো একে
দিলো।।
শেষরাতের স্নিগ্ধ চাদের আলো, একটু দখিনা
বাতাসের ছোয়া আর হৃদয়ের এই ভালোবাসার স্পর্শ
আমাকে মাতাল করে তুলছিলো।। এক মুহুর্তে মনে
হচ্ছিল হৃদয়কে ও জড়িয়ে নিই আমার পরম
স্নায়ুস্রোতে।।
হৃদয় এবার আমাকে বললো চলো সামনের দিকটাতে
একটু হাটা যাক।। ওর কথায় আমার ঘোর কাটলো।। মাথা নাড়িয়ে ওর সাথে আমিও হাটতে লাগলাম।।
ছাদের ওপরে সাজানো ফুলবাগান দেখে আমার
শেষরাতের ভালোবাসা যেনো আরেকবার পূর্নতা
পেলো।। আমি বিস্ময়ে হৃদয়ের দিকে ফিরে
তাকালাম।। চাদের স্নিগ্ধ আলোয় আমি স্পষ্ট দেখলাম
হৃদয় চোখ নেড়ে এক অজানা অনুভুতি প্রকাশ করলো।।
যাতে স্পষ্ট তার মনের কথা পড়তে পারছিলাম
আমি।। ওর চোখদুটো একটা কথায় শুধু বলছিলো ----
-- হ্যা মিমি আজ থেকে এই ফুল, ফুলের সুভাস সবই
তোমার।। প্লিজ যত্ন করে আগলে রেখো এই
ভালোবাসার প্রতীকী গুলোকে।।। তবে একটা কথা শুধু
তোমারই,,,, এই প্রতীকী ভালোবাসার মাঝে সবচেয়ে
সৌন্দর্যময় প্রতীক কিন্তু আমার এই লক্ষি বউয়ের লক্ষি
চাহনিই।।!!!
নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না।। নিজের
মনের সাথে কিছুতেই আপোষ করতে পারলাম না।।
পারলাম না প্রকৃতির এই বাস্তব মায়াকে কাটিয়ে
ওঠতে,,,
দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম এই হ্যাংলা, বদমাইশ,
পচা, বাদড় ছেলে মিঃ হৃদয় কে।।।
এক মুহুর্তে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী, সবচেয়ে
বিশাল, সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এইটায়।।যা
আস্টেপিস্টে বেধে রেখেছে আমাকে।।।

নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে কয়েকফোটা জল
গড়িয়ে পড়ছিলো।। কিন্তু অদ্ভুত ছেলে সে এইটাও
বুঝে যাচ্ছিল।। বলে ওঠলো ---
--ঝরতে দাও চোখের পানি।। তাকে আটকিও না।।
তাহলে আমাদের ভালোবাসার মাঝে ঘাটতি থেকে
যাবে।।বলেই আরো শক্তকরে আমাকে জড়িয়ে নিলো।।
জানিনা কতক্ষণ দুজনে এভাবেই ছিলাম।। শুধু মনে
হচ্ছিল যে সময়টাই ছিলাম,, সেটা যেনো অতি
তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে গেলো।।।
মনের অজান্তেই বাবা মার সিদ্ধান্ত কে আরেকবার
স্যালুট দিতে ইচ্ছে করছে।। হয়তো তাদের জন্যই মাত্র
কয়েক ঘন্টার পরিচয়ের অচেনা একজনের বুক কে আজ সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা মনে হচ্ছে, হয়তো তাদের জন্যই
আমার ভালোবাসার শূন্যের কোটা আজকে পূর্ণ মনে
হচ্ছে।।
ভাবনাগুলো ভাবতেই রাতের একমুঠো চাদকে গ্রাস
করে নিলো এক টুকরো মেঘমালা। অন্ধকার গারো হয়ে
আসছিলো।। তাই হৃদয় আমাকে বললো
-- চাদ আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে,, চলো রুমে
যায়।।
বলেই আবারও কোলে নিয়ে রুমে আসলো।। তারপর
আমাকে ঘুমোতে বলে সে বেলকুনিতে গিয়ে
দাড়ালো।।
হৃদয়,,,,,!!!!! সত্যিই হৃদয়,,,,!!! প্রতিটা মুহুর্ত তাকে নতুন করে চিনছি,, নতুন করে দেখছি, নতুন করে ভাবনাতে আটকে রাখছি।। আমি জানি ও কিছু একটা নিয়ে চিন্তায় আছে, তবুও আমাকে একফোটা বুঝতে না দিয়ে নিজেকে সামলে আমাকেও সামলে নিলো।। এ যেনো আমার জীবনের নতুন শিক্ষা।
কেননা আমি একটু বিষয়েই ঘাবরে যেতাম, অথচ
হৃদয়ের বোধশক্তি আমাকে নতুন করে জাগ্রত করলো।।।
যাইহোক সারাদিনের ব্যস্ততার কারনে একটুতেই
চোখজোড়া ধরে আসলো।। আমি ঘুমিয়ে গেলাম,
হৃদয়কে রেখেই।। এতটুকু সময়ে ওকে যতটা জানলাম
তাতে এটা আমি ঠিকই বুজেছিলাম যে আজকের রাতে
ওর চোখের পাতা কিছুতেই এক হবে না।।।
.....
রংধনুর রং,রোদ্রের স্নিগ্ধ আলো চোখে এসে পড়তেই, ঘুমটা ভেঙে যায় আমার।। চোখ খুলে একটুও অবাক হলাম না আজকে,, আমি জানতাম হৃদয় এখানেই থাকবে।।
হ্যা সত্যিই!!! সে তার মায়াবি চোখদুটো দিয়ে
আমাকে দেখছিলো।। প্রতুষ বেলার চাহনিতে যতটুকু
বুঝেছি আমি
---ছিলনা সেই চোখে কোনো বিশেষ অঙ্গের প্রতি
আকর্ষন, ছিলনা সামান্যতম কোনো ললুপ দৃষ্টি।।
শুধু ছিলো পরম ভালোবাসায় জড়ানো কিছু স্নিগ্ধ
আবেশ।।।
---
---গুড মর্নিং বউ।( হৃদয়)
--হুম গুড মর্নিং (আমি)
বলেই চায়ের কাপ এগিয়ে দিলো আমার দিকে।। আমার
কেনো জানিনা ভীষন লজ্জা লাগছে ওর দিকে
তাকাতে।। বুঝলাম বিষয়টা লক্ষ্য করে মিঃ মুচকি
মুচকি হাসছে।।
তারপর চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে আবারও অবাক
হলাম আমি।। একি চা কোথায়???
-- কিহ! চা নেই তো .....??থাকবে কি করে বলো আমি
তো আর চা করতে পারি না। শুধু দেখালাম যদি
পারতাম তবে এভাবেই এনে খাওয়াতাম।। (হৃদয়)
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে, সারাজীবন সালা
বদজাতটা আমার পিন্ডি চটকে দিবে।। তবুও খুব ভালো
লাগছিলো তার ভালোবাসার খুনসুটি গুলো।। জানিনা
কোনো মেয়ে কখনও বাসর রাত থেকে এত
ভালোবাসা পেয়েছে কিনা?? তবে আমি
ভালোবাসায় পূর্ণ।।
আমার ভাবনার মাঝেই আমিও একটু মুচকে হেসে
ওঠলাম।। তারপর ও বললো --
-- খুব ইচ্ছে হয় প্রতিদিন সকালে বউয়ের হাতে মিষ্টি
চায়ের সাথে ঘুমটা ভাঙাতে।। (হৃদয়)
ওর কথা শুনে মুচকি হেসে বিছানা থেকে নেমে
আসলাম।। বললাম
--রান্না ঘরটা কোথায়?? (আমি)
বলেই বাহিরে যেতে চাইছিলাম।। ভালোবাসার
মানুষের আবদার টা পূরন করতে।। আমার অজান্তেই আমার মন বলে ওঠলো প্রত্যেকটা সকাল তোমার বউয়ের হাতের মিষ্টি চায়েই শুরু হবে তোমার মিঃ হৃদয়ে
।।
কিন্তু হৃদয় আমার হাতটা ধরে কাছে টেনে বললো-
--এখন লাগবে না পাগলী। যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।।
বাহিরে মা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।।।
কথাটি শুনেই ঘড়ির কাটার দিকে তাকালাম।।।। ইস্স
সাতটা বেজে গেছে।। বাহিরে মা অপেক্ষা করছে।।
আর কথা না বাড়িয়ে ওকেও কিছু বলার সুযোগ না
দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।।।
ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এলাম। দেখি আমার শ্বাশরী মা
বসে অপেক্ষা করছে।। আমাকে দেখেই আমার দিকে
এগিয়ে এসে বললো ---
--আয় মা, আমার কাছে বস।।
বলেই আমাকে বসিয়ে দিয়ে দু কাপ চা নিয়ে হাজির
হলো।। তারপর আমার পাশে বসে বললো,
- নে মা চা টা নে নাইলে ঠান্ডা হয়ে যাবে।
আমি চায়ের কাজটা হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।তারপর শাশুড়ি মা বললেন,
- কি রে মা কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো তোর? (মা)
- জ্বি না মা আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।(আমি)
আমি মায়ের সাথে চা খাচ্ছিলাম আর এদিক সেদিক তাকিয়ে হৃদয়কে খুঁজছিলাম।হয়তো ব্যাপারটা শাশুড়ি মা লক্ষ করছিলো।তাই বললো,
- কিরে মামা কাউকে খুজছিস?জানি তো হৃদয়কে খুজছিস।
আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম।মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছিলাম না।শুধু মাথা নাড়ালাম।উনি বললেন____
- কেন তুই জানিস না,ও তো একটু মিলে গেছে।কাল শেষরাতের দিকে আমাদের মিলে আগুন লেগে গেছিলো।শুনলাম অনেকটাই নাকি ক্ষতি হয়ে গেছে।

কথাটি শুনে আমি অবাক ও নিস্তব্ধ হয়ে যাই।তারমানে হৃদয়কে ওইসময় এই কারনেই এমন দেখাচ্ছিলো।আমার ভেতরটা মুচরে উঠে।নিমিষেই মলিন হয়ে যায় আমার মুখ।আমার অবস্থাটা বুঝতে পেরে শাশুড়ি মা বলে উঠলেন,
- কিরে তুই জানতিস না?
না মা।আপনার ছেলে তেমন কিছু বলেনি।উনি বললেন,
- হৃদয় এমনি।তুই চিন্তা করিস না।সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি আমার শ্বাশরীকে দেখেও অবাক হচ্ছি।দুই মাস ছেলে সত্যি অন্যরকম ধাতুতে গরা।যা আমাদের আট দশটা পরিবারের চেয়ে অনন্য।তারপর আবারো শাশুড়ি মা বলে উঠলেন,
- শোন তোকে কিছু কথা বলি মা,জানিস তো হৃদয়ের বাবা নেই।হৃদয়ের ছোটবেলা তেই উনি মারা যান।খুব কষ্ট আর ধৈর্য্যের সাধনার ফলে আজকে হৃদয় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তার বাবার ফেলে যাওয়া ব্যবসা একাই দাড় করিয়েছে।যদিও হৃদয়কে ছোটবেলা থেকে একটা কথাই শিখিয়েছিলাম যে,নিজে চেষ্টা করো,নিজের পথ নিজেই তৈরি করো,যেকাজ দশজনে পারে না তুমি একা চেষ্টা করবে,কোনো বিষয়েই অতিরিক্ত টেনশন করবেন না,যেটা হওয়ার সেটা হবেই তুমি চাইলেও আটকাতে পারবে না।তার চেয়ে ধৈর্য নিয়ে তাহলে মোকাবেলা করবে।হয়তো হৃদয় ছোটবেলা থেকেই আমার কথাগুলো মেনে আসছিলো।
মা রে নিজের ছেলে বলে বলছি না,হৃদয় সত্যিই একজন খাটি ছেলে।
বলেই আমার হাতটা জড়িয়ে ধরে বললেন,
- কথা দে মা কখনো আমার ছেলেকে কষ্ট দিবি না।
দেখলাম কথাগুলো বলতে গিয়ে উনার চোখের কোনে পানি জমলো,কিন্তু গড়িয়ে পরলো না।বুঝলাম উনারা অন্য জাতের মানুষ।আমিও কেদে দিলাম।কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছিলাম।আমি শাশুড়ি মাকে জড়িয়ে ধরলাম।মনে হলো আমার মায়ের জেরোস্কপি।কেননা তার বুকে ও একই রকম শান্তি।তারপর মা আমাকে বললো,
- চল মা তোকে পুরো বাড়িটা চিনিয়ে দি।আজ থেকে সব দায়িত্ব তোর। আমার রেস্ট।শোন মা,এই শহরে আমার আপন বলতে তেমন কেউ নেই,তাই তোদের বিয়েবিয়েটাও ঘরোয়া ভাবে শেষ করেছি।তাই এখানে আমি ছাড়া কিছু বলার মতো কাউকে পাবি না।তাই কিছু লাগলে অবশ্যই আমাকে বলিস মা।
আমার বিস্মিত হওয়ার মাত্রা বুঝি অতিক্রম করলো।এতো অমায়িক পরিবার সাধারণত সৃষ্টিকর্তা ভাগ্যে রাখলেই সম্ভব।
আমার শাশুড়ি মা পুরো বাড়িটা দেখালো আমাকে।এর মধ্যে অনেক গল্পও করলো।তিনি আমাকে হৃদয়ের সকল পছন্দ অপছন্দ আমাকে হতাশ বললেন।এক মুহুর্তে আমি ভুলেই গেছিলাম, আমি এই অচেনা পরিবারের নতুন সদস্য।(প্রত্যেক শাশুড়ি মা যদি এমন হইতেন কতোই না ভালো হইতো)।আমি মাকে আরেকবার বললাম,
- মা,মিলের অবস্থাটা এখন কি একটু জানলে ভালো হতো না?
- না রে মা,আমি বললাম না,এটা নিয়ে টেনশন করিস না।হৃদয় সব সামলে নেবে।চল আমরা দুপুরের রান্না
রান্নাটা শেষ করি।। তােকে সব দেখিয়ে দেই।। (মা)
আমি মাথা নেড়ে তার সাথে হাটা দিলাম রান্না
ঘরে৷৷৷৷
প্রায় দুই ঘন্টা পর রান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে
আসলাম। পুরাে রান্নার সময়ে শ্বাশরী মায়ের মুখের
মজাদার সেই গল্প আমাকে ভুলিয়েই দিয়েছে যে,
আমি কখনও রান্না ঘরের ছায়াই মারাড় নি।। মনে
হচ্ছিল এই রান্নার কাজ আমার কত বছরের অভ্যাস।।
যাইহােক ঘরে বসে হৃদয়ের কথা মনে পড়ছিলাে।
শালা হ্যাংলা সেই কখন গেছে এখনও আসার নাম গন্ধ
নেই।। জীবনে এই প্রথম কোনাে ছেলেকে এত মিস
করছি।।
ঘরের ভেতর একাই ঘােরাঘুরি করছিলাম। ঘরটিকে
তেমন করে গুছিয়ে না রাখলেও, পুরাে ঘরটিতে এক
সৌন্দর্য বিদ্যমান ছিলাে।। রাতের ধকলে তেমন একটা
দেখা হয়নি।।ভেতরের সবচেয়ে সুন্দর করে সাজানাে
ছিলাে বুকসেল্ফটা।। তাই একটু এগিয়ে সেখানে
গেলাম।। বইগুলাে দেখছিলাম। বেশ কয়েকটি বই আমার পছন্দের ছিলাে। হঠাৎ ই আমার চোখ গেলাে এক নীল রংয়ের ডায়েরীর দিকে।। ধুলাে পড়া ডায়েরীর কিছু জায়গায় হাতের ছােয়া দেখা যাচ্ছিল।। মনে হয়
অনেকদিন পর কেউ ডায়েরী টিতে হাত দিয়েছে।।
মােটামােটি আগ্রহ নিয়েই ডায়েরী টা খুললাম।।
ডায়েরীর ১ম পনের পাতায় কোনাে লেখা ছিলনা।।
তারপর থেকে লেখা--পনের দিন মিমির ছবি দেখে আসছি।। কিভাবে তার সৌন্দর্যের বর্ণনা দেবাে ভেবে পাচ্ছিনা। খুব কাছ থেকে আজকে তাকে দেখলাম।। আগেই বললাম তার সৌন্দর্য আমার কাছে বর্ণাতীত।। তাই কি মায়াবীই যে তাকে লাগছিলাে তা শুধু আমিই
জেনেছিলাম।।
প্রথম দেখাতেই মিমি একটু অবাক হয়েছিলাে আমাকে
দেখে। কেননা রাতে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে
ভিজে খুব কষ্টে তারজন্য একগুচ্ছ গােলাপ আর প্যাড
নিয়ে এসেছিলাম। তার হাতে দেওয়ায় সে যে ভীষন
রকম অবাক হয়েছিলাে তা আমি বুঝেছিলাম।ওর চোখ
আমাকে প্রশ্ন করছিলাে আমি কিভাবে জানলাম তার
পিরিয়ডের কথা।।
আসলে বিয়ের পর থেকে গাড়িতে বসে আড়চোখে
দেখছিলাম তাকে। কিন্তু সে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকেই চেয়ে ছিলাে। আমার দিকে একটুও
নজর ছিলাে না ওর। অবশ্য এর ফাকেই ওকে কয়েকবার পেট চেপে ধরতে দেখেছি।। আমি বুঝছিলাম ওর খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না।
যাইহােক বাসায় আসার পর আমার পকেটে থাকা
কাবিনের নকল কপিটা বের করতে গিয়ে হঠাৎ ই আমার
চোখ পড়ে তার জন্ম তারিখের ওপর।। আমি ভীষন খুশি
হয়েছিলাম, কেননা আজকের রাতে ওকে একটা হলেও
সারপ্রাইজ দিতে পারবাে।। আর কিছু না ভেবেই আমার
বন্ধু , তাকে সব ম্যানেজ করতে বললাম।। আমার সবচেয়ে কাছের আর প্রিয় বন্ধু হলাে হাসান/আর সেই সব ব্যবস্থা করেছিলাে। ধন্যবাদ বন্ধু তােকে
হাসান।
বিয়ের দিনের আমার কাছের সবচেয়ে খুশির মুহুর্ত
ছিলাে মিমির সারপ্রাইজ হওয়া।। যা ছিলাে বিয়ের
রাতের সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার কাছে।।
তারপর ডায়েরীর পাতাটায় আর কিছু লেখা ছিলাে না
।। শুধু তার চারপৃষ্টা পর লেখা ছিলাে, যদি মন
খারাপ হয়, তবে বই পড়৷৷৷৷
সালা বুদ্ধ!লেখার কি ছিড়ি ....?? আয় না বাসায় আয়
আজকে???
ভাবতে ভাবতেই মহারাজ হ্যাংলা এসে হাজির।।
আমি তাড়াহুড়াে করে ডায়েরী টা রেখে দেই৷৷৷
তারপর খুব সাহস নিয়ে তার কাছে গিয়ে বললাম
কি মিঃ হৃদয় খুব টেনশন দিতে ভালাে লাগে
নাহ তােমার??
এই কি ভাবাে কি নিজেকে হ্যা?সব তুমিই বুঝবে??

* * * * * * *

তুমিই সব টেনশন নিবে?? আমি কি কেউ নই তােমার??
বলেই ওর বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম।। হয়তাে ও সব বুজতে
পারছিলাে, তাই আমাকেও পরম আদরে বুকে আগলে
নিলাে। তারপর বললাে
- খুব ভালােবাসাে আমায়???
এবার আমি কেদেই দিলাম।তারপর তার বুক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম।।দেখলাম বুন্ধুর মুখটা মলিন হয়ে গেলাে। তাই আমি বললাম।
----মন খারাপ হলে, বই পড়তে হয়
আর খুব খারাপ হলে, বউকে জড়িয়ে ধরতে হয়।।।
বুজছেন মিঃ হ্যাংলা?????
ও বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে
অবুঝের মতাে মাথা নেড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলাে
তার বুকে।। বুজতে পারছিলাম ইহা পরম ভালােবাসার
পরম দেয়াল।।।।

💞(সমাপ্ত)💞

[বিঃদ্রঃ-প্রিয় পাঠক-পাঠিকা গল্প কেমন লাগলাে বলতে ভুলবেন না।গল্পে যদি কোনাে ভুল হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমার
দৃষ্টিতে দেখবেন।যারা প্রথম থেকে গল্পটির সাথে ছিলেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকেন , সুস্থ থাকেন।)

💞আল্লাহ হাফেজ💞


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad