বইয়ের নামঃ একটি অগ্রন্থিত কবিতার আত্মজীবনী
কবিঃ আয়শা আহমেদ
প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী
প্রকাশকালঃ ২০২০ সাল।
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১১২
মলাট মূল্যঃ ২০০ টাকা
কবির যাপিত জীবনের অন্তক্ষরণ, মোহ, মুগ্ধতা,বিস্ময়,বিদ্রোহ নিয়েই এই কাব্যগ্রন্থ।
কবির যাপিত জীবনের অন্তক্ষরণ, মোহ, মুগ্ধতা,বিস্ময়,বিদ্রোহ নিয়েই এই কাব্যগ্রন্থ।এই বইয়ের কবিতাগুলো অত্যন্ত জীবনঘনিষ্ঠ,এসব কবিতায় আছে আবেগ, প্রেম, ভালোবাসা আর যাপিত জীবনের আলাপন।একজন আধুনিক চিন্তা-চেতনার অধিকারী নারী নিজেকে খুঁজে নিতে পারবেন এই বইটিতে। অসাধারণ সব শব্দের গাঁথুনিতে কবিতাগুলো একসারিতে এসে জমা হয়েছে এ গ্রন্থে। ৭০টি ভিন্ন ভিন্ন কবিতার প্রতিটিতেই আছে বৈচিত্র, ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্যপট, প্রতিটি কবিতা স্বতন্ত্র।মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো এ কবিতাগুলো স্থান পেয়েছে এক মলাটে,এছাড়া বইটির প্রচ্ছদ, বাঁধাই, এবং কাগজ সত্যিই মনোমুগ্ধকর।কবিতাগুলো পড়লে কখনোই মনে হবে না এটি কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। বলা হয়ে থাকে কবিতা সাহিত্যের অগ্রগামী শাখা আর আমার মনে হয়েছে আয়শা আহমেদ তার সময়ের চেয়েও অগ্রগামী। প্রতিটি কবিতায় কবির আবেগের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ সবাইকে মুগ্ধ করবে বলে আমার বিশ্বাস।
তাই কথা না বাড়িয়ে কিছু কবিতার লাইন পড়ে নেয়া যাক।
কবি প্রথম ফ্ল্যাপের একটি কবিতা দিয়েই পাঠ শুরু করা যাক…
“আমার শরীরী কবিতা ফুরিয়ে গেলে,
তখনও এমন করে চাইবে? ভালোবাসবে?
“শরীর তো গণিকাও দেয় অরুণিমা,
আজীবন বেঁধে রাখবার মতো
অবিচ্ছেদ্য টান,
যে অনবদ্য কবিতা আমাকে তুমি দিয়েছ, তার নাম মন !”
#কবিতাংশ_কথোপকথন_থেকে
এই বইতে কবি “আপনি” সম্বোধনকারী একজন মানুষের জন্য হাহাকার করেছেন। সেই চরিত্রের নাম কখনও শুভ্রনীল,অনিমেষ,শতরুপ,নির্ঝর কখনওবা বর্ণ।
“তারপর একদিন
পৃথিবীকে জানিও শতরূপ,
ঠিক কতখানি দূরে যাবার পর জেনেছিলে, আমিও ছিলাম”।
#কবিতাংশ_সুইসাইড_নোট
“আপনার চোখের দিকে একবার তাকালেই
আমি ছুঁয়ে ফেলি সমুদ্রজলীয় নীল,
একজোড়া সমুদ্রস্নান হয়ে যায় আমার।
অথচ আমি কখনো সমুদ্র ছুঁয়ে দেখিনি,
সামুদ্রিকতা ছোঁয়নি আমায়…”
#কবিতাংশ_সমুদ্রবিলাস
“এইসব আশ্বিনের সন্ধ্যা, মিহিদানা বৃষ্টি,
আর অকারণ মন খারাপেরা, তোমাকেও ছুঁয়ে যায় শতরূপ?
আমার অভিমান, আমার শূন্যতা,
তোমাকে পোড়ায়?”
#কবিতাংশ_চিরকুট
“তোমার নামে,
কুড়িয়ে রাখি নষ্ট বিকেল, মিথ্যে সাঁঝের আবির আলো,
আমার ভাগে থাকুক না হয়
কালির আঁচড়,আঁধার যত নিকষ কালো” !
#কবিতাংশ_উপলব্ধি
“সে আমাকে নদী দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল,
আর আমি ছুঁয়েছিলাম তাঁকে।
যে জল ছুঁয়েছে তার চরণ,
সেই নদীটা ছুঁয়ে
আমি যতটা ছুঁয়েছি জল;
তারচেয়েও বেশী ছুঁয়েছি তাঁকে…”
#কবিতাংশ_জলস্পর্শ
“তবুও নদী বিলীন হয় সমুদ্রে,
আর মানুষ নিঃসঙ্গতায় !
যে যার ব্যক্তিগত মোহনা ছুঁয়ে দিলেই
একদিন মানুষ হয়ে পড়ে ঈশ্বরের মত একা !”
#কবিতাংশ_মোহনার পরে
“কতগুলো বর্ষা পেরুলে
ভালোবাসার বুকেও জন্মে কদম কুঁড়ির ঘ্রাণ?
কতগুলো মৃত্যু পেরুলে
ভাঙে মানুষের মিথ্যে অভিমান !”
#কবিতাংশ_জলের_জীবন
“ভালোবেসে যে ঘর আমরা বাঁধিনি
সে ঘর ভাঙবে সাধ্য কার !”
#কবিতাংশ_পরিযায়ী_প্রেম
“তুমিহীন এক চিলতে জায়গা আমাকে দেখাও
হাসির রোদ্দুর থেকে অশ্রুর হেমলক,
তোমাকে আমি পাইনি কোথায়?”
#কবিতাংশ_পূর্ণতা
“আমাকে ভালো না বেসে তুমি কোথায় যাবে?
একটা মুগ্ধ মাতাল হাসিতে
কেড়ে নেবো তোমার সাত জন্মের প্রেম।”
#কবিতাংশ_শোধ
কবির প্রচণ্ড দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে কিছু কবিতায়, সেখানে তীব্র প্রতিবাদী আচরণ করেছেন…
“যতবার আমি ধর্ষিত হই, যতবার আমরা ধর্ষিত হই,
ধর্ষণ হয় আপনার, বাংলাদেশের!
আর কত ঘুমের ভান মহামান্য রাষ্ট্র?”
#কবিতাংশ_চিৎকার
“কবি তার কবিতায় উচ্চারণ করেছেনঃ-
“ফক্কিনির পুত বলবি না শুয়োরের বাচ্চা,
বাংলাদেশ আমার মা!”
#কবিতাংশ_মেরুদণ্ড
কবি বাংলাদেশ নিয়ে হতাশার সাথে সাথে আশার স্বপ্নও দেখেছেন,
“যাবতীয় হতাশাবাদী স্বপ্নদের মৃত্যুর নামে উৎসর্গ করে
এসো আমরা কবিতা হই,
স্বপ্নের মতোন, চোখে চোখে তান্ডব চালিয়ে
এঁকে দিই এক চিরস্থায়ী প্রেম, বাংলাদেশ।”
#কবিতাংশ_বাংলাদেশ
এই বইতে আপনারা পাবেন দুর্দান্ত আবৃত্তিযোগ্য কিছু কবিতা যেমনঃ- প্রেম, কথোপকথন থেকে,ঝর্ণাধারার গল্প,বাড়ির নাম জীবনপুর, দেখা, চিরকুট, অভ্যাস, দহন,চিৎকার, আত্মতুষ্টির ক্যানভাস, মেরুদণ্ড, প্রেম-অপ্রেম, কুঁড়ির পরে, তৃষ্ণা পোষার গান,একটি অগ্রন্থিত কবিতার আত্মজীবনী ইত্যাদি
বইটির শেষের দিকে আছে বইয়ের নামের উপর এক চমৎকার কবিতা “একটি অগ্রন্থিত কবিতার আত্মজীবনী”
অবশেষে বলতে চাই কবিতার মুগ্ধতায় ডুবে থাকতে চাইলে সুখপাঠ্য এ বইটি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০, ভূমিপ্রকাশ স্টলের ৭২২থেকে সংগ্রহ করে নিন!
রকমারি থেকে কিনতে চাইলেঃ” একটি অগ্রন্থিত কবিতার আত্মজীবনী “
নিয়মিত কবিতা পড়ুন। কবিতায় বাঁচুন।
ধন্যবাদ
রিভিউ লিখেছেনঃ নজরুল হায়দার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।